গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
টুঙ্গিপাড়ায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি আ.লীগ নেতার, ধর্ষণ মামলায় সহযোগিতা করায়
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় ভুক্তভোগী নারীকে সহযোগিতা করায় সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম আফ্রিদিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রথমে হাত-পা ভাঙার হুমকি পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করায় ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার হুমিক দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাদশা এবং তার চাচাতো জিকরুল মুন্সীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম। রকিবুল দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ধর্ষণের শিকার ওই নারী সাংবাদিক তার আপন মামি। তাকে মামলা পরিচালনা করতে সহযোগিতা করায় ওই আওয়ামী লীগ নেতার চাচাতো ভাই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
এর আগে ২০১৩ সালে এক যুবককে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে রাতের অন্ধকারে গুলি করে হত্যাকাণ্ডে পর বেশ কয়েক বছর পলাতক ছিলেন জিকরুল মুন্সি। তখন তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র মামলা হয়। এখন আবার এলাকায় ফিরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে।
জানা গেছে, প্রথমে হাত-পা ভাঙ্গার হুমকি পেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সাংবাদিক রকিবুল। জিডির খবর অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা জানতে পারলে তার চাচাতো ভাই জিকরুল মুন্সিকে দিয়ে ওই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেন।
মঙ্গলবার দেওয়া লিখিত অভিযোগ বলা হয়েছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন সাংবাদিক রকিবুলের আপন মামী। এতে তিনি বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বাদশার চাচাতো ভাই জিকরুল মুন্সী (৩০) সাংবাদিক রকিবুলের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার জন্য গোপালগঞ্জের একদল সন্ত্রাসী ভাড়া করেন। এ সংক্রান্ত একটি ফোন কল রেকর্ড হাতে আসায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় জিডি করেন ওই সাংবাদিক। পরে জিডির কথা আওয়ামী লীগ নেতা ও তার চাচাতো ভাইয়ের জানতে পারলে সাংবাদিক রকিবুলকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন তারা।
সাংবাদিক রকিবুল আফ্রিদি বলেন, ‘আমার আপন মামী গোপালগঞ্জ জজ কোর্টে আওয়ামী লীগ নেতা বাদশার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। আমি তাকে মামলা পরিচালনা করতে সহযোগিতা করছি। তাকে সহযোগিতা না করার জন্য আমাকে কয়েকবার হুমকি দেয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাদশার ভাই জিকরুল। এখন হত্যার হুমি দেওয়ায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় ও গোপালগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা ও তার চাচা ভাই জিকরুল মুন্সির মোবাইল ফোনে বুধবার একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, ‘সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’